শুক্রবার, ২২ নভেম্বর ২০২৪, ১০:২৩ পূর্বাহ্ন
আমার সুরমা ডটকম:
পৈতৃক সম্পক্তি দখলের জের ও আম পাড়াকে কেন্দ্র করে সুনামগঞ্জের তাহিরপুরে দু’সহোদর পরিবারের মধ্যে সংঘর্ষে বসতবাড়ি ভাংচুর নারী-পুরুষ স্কুল শিক্ষার্থীসহ কমপক্ষে ১০ জন আহত হয়েছেন। শুক্রবার রাতে গুরুতর আহত উভয় পরিবারের ৫ জনকে সিলেট এমএজি ওসমানী মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতাল ও তাহিরপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়েছে। এরপুর্বে শুক্রবার বিকেলে উপজেলার উত্তর শ্রীপুর ইউনিয়নের সোনাপুর পশ্চিম পাড়ায় ওই সংঘর্ষের ঘটনাটি ঘটেছে।
শুক্রবার রাতে উপজেলার বাগলী ও সোনাপুর গ্রামের একাধিক বাসিন্দাদের সুত্রে জানা গেছে, উপজেলার সোনাপুর গ্রামের মৃত ভাজন আলীর বড় ছেলে খোকা সর্দার ও ছোট ছেলে রোকন সর্দারের মধ্যে পৈতৃক সম্পক্তি নিয়ে গত একযুগ ধরে পুর্ব বিরোধ চলে আসছিলো।
শুক্রবার বিকেলে বিরোধপূর্ণ সোনাপুর পশ্চিম পাড়ার পৈতৃক বসত বাড়ি একটি আম গাছ হতে পূর্ব পাড়ায় থাকা রোকনের এক কিশোরী কন্যা ও অপর কিশোরী ভাতিজী আম পাড়তে যায়। এদিকে খোকা সর্দার আম পাড়তে নিষেদ করলে বাড়ি ফিরে ওই দুই কিশোরী বাড়ি ফিরে বিষয়টি রোকন সর্দার ও পরিবারের লোকজনের নিকট নালিস করেন।
ক্ষিপ্ত হয়ে রোকন ও তার পরিবারের আম পাড়তে নিষেদের কারন জানতে পশ্চিম পাড়ায় পৈতৃক বসতবাড়িতে গেলে উভয় পরিবারে লোকজন কথা কাটাকাটির এক পর্যায়ে রক্ষক্ষয়ী সংঘর্ষ জড়িয়ে পড়েন।
সংঘর্ষে রোকন সর্দার, তার স্ত্রী সমলা বেগম, তৃতীয় শ্রেণিতে পড়ুয়া শিশু পুত্র সুমন, ৭ম শ্রেণিতে পড়ুয়া কিশোরী কন্যা রুবিনা আক্তার, সহোদর ছোট ভাই খসরু মিয়া, তার স্ত্রী জুলেখা বেগম, তাদের কিশোরী কন্যা ইয়াসমীনা বেগম আহত হন।
অপরদিকে খোকা সর্দারের পরিবারের আহতরা হলেন খোকার ছেলে বাচ্চু মিয়া, খোকার অপর ছেলের স্ত্রী শারমিন বেগম, খোকার ৭ম শ্রেণিতে পড়ুয়া কিশোরী কন্যা সাবিনা বেগম।
আহতদের মধ্যে আংশকাজনক অবস্থায় রোকন ও তার শিশু পুত্র সুমনকে সিলেট এমএজি ওসমানী মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ও খোকার ছেলে বাচ্চু, কিশোরী কন্যা সাবিনা ও পুত্রবধু শারমিনকে শুক্রবার রাতেই তাহিরপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়েছে।
শুক্রবার রাত ১টায় উপজেলার সোনাপুর পূর্বপাড়ার রোকন সর্দার জানান, আমার বড়ভাই খোকা সর্দার আমাদের দুই ভাই ও চার বোনকে পৈতৃক সম্পক্তি সহ প্রায় ১০ কেদার (৩০ শতকে এক কেদার) সম্পক্তি জোরপূর্বক দখল করে রেখেছেন ২০০৮ সাল হতে। শুক্রবার পৈতৃক ভিটায় রেখে আসা বসতবাড়ি ভাংচুরের খবর পেয়ে বাঁধা দিতে গেলে তার পরিবারের লোকজন সংঘবদ্ধ হয়ে লাঠিসোটা দিয়ে পিটিয়ে ও রামদা দিয়ে কুপিয়ে আমাদেরকে রক্তাক্ত জখম করে।
শুক্রবার রাতে সোয়া ১টার দিকে উপজেলার সোনাপুর পশ্চিম পাড়ার খোকা সর্দারের নিকট এ বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, আমার চাচার নিকট হতে ক্রয় সুত্রে আমার বসতবাড়ির অংশে আমার ছোট ভাই রোকন অন্য ভাইবোনদের নিয়ে নিজেদের ওয়ারিশ দাবি করে নিজেরা বিরোধে জড়িয়ে পৈতৃক ১০ কেদার জমি পতিত রেখে গ্রামের পুর্ব পাড়ায় বসতবাড়ি তৈরী করে বিগত কয়েক বছর ধরে বসবাস করে আসছে, আমি পৈতৃক কোন সম্পক্তি দখল করিনি। তিনি আরো বলেন, আম পাড়তে নিষেধ করায় শুক্রবার বিকেলে রোকন তার পরিবারের লোকজন নিয়ে এসে আমার বাড়িতে এসে আমার পরিবারের লোকজনকে ধারালো দা দিয়ে কুপিয়ে আহত করে। পরে খবর পেয়ে আমি বাগলী বাজার হতে বাড়ি ফিরে তাদের রেখে যাওয়া একটি পতিত ঘর ভাংচুর করেছি।
শুক্রবার রাত দেড়টার দিকে জানতে চাইলে তাহিরপুর থানার ওসি মো. আতিকুর রহমান বলেন, লোকমুখে সংঘর্ষের বিষয়টি জেনেছি, উভয়পক্ষের নিকট হতে লিখিত অভিযোগ পেলে আইনি ব্যবস্থা নেয়া হবে।